'Lady with the Lamp', দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আহত সৈনিকরা এ নামেই 
ডাকতেন ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলকে। আজ থেকে কত বছর আগে উনি শিখিয়ে গিয়েছেন 
আধুনিক নার্সিং আর আহতের সেবা। ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল- জন্ম-ইটালী, ১৮২০। 
অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে ছিলেন। পিতা উইলিয়াম নাইটেঙ্গেল, হ্যাম্পসায়ারের 
বাসিন্দা আদতে যা জানা যায় জমিদার ছিলেন। প্রথাগত শিক্ষার বাইরেও তিনি 
কন্যা ফ্লোরেন্সকে বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী করে তোলেন। অত্যন্ত প্রাচুর্যের 
মধ্যে মানুষ হয়েও ফ্লোরেন্স বেঁকে বসলেন বিয়েতে। এবং মা ও বাবার অমতে ঠিক 
করলেন নার্সিং করবেন। গোঁড়া ইংরেজ বাবা- মা মোটেই খুশী হননি সেদিন এই জেদী 
মেয়েটির কথা শুনে। যে বয়সে মেয়ের বিয়ে করে থিতু হবার কথা সে মেয়ে বলে কিনা 
সেবা করবে! নাছোড়বান্দা মেয়েও। এক কথায় ফিরিয়ে দিলে লর্ড হাউটনকে বিয়ের কথা
 পাড়া মাত্র। 
অগত্যা মানতে হল মা-বাবাকে। তিনি নার্সিং পড়াশোনা করলেন টানা দুবছর কেইসেরেথ, জার্মানীতে । অত্যন্ত কঠিন সে ট্রেনিং শেষে মা ফ্যানি নাইটএঙ্গেলকে লিখলেন- এটুকুই চান জীবনে ("This is Life! I wish for no other world but this.")। পৃথিবীর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতিহাস সেদিনই পেল নার্সিং-এর অনন্য নজির।
এর মধ্যে লণ্ডনের বিভিন্ন হাসপাতালে এলিজাবেথ ব্ল্যাকওয়েলের সাথে কাজ করেছেন মেডিসিনের ওপর । অনুপ্রানিত হয়েছেন এলিজাবেথের ব্যাক্তিত্ব আর বুদ্ধিমত্তায়। তো এই এলিজাবেথ কে? এলিজাবেথ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মহিলা চিকিতসক। মূলতঃ তার অনুপ্রেরনায় ফ্লোরেন্স যোগ দিয়েছিলেন নার্সিং ট্রেনিংয়ে। শিক্ষা শেষে ফ্লোরেন্স যোগ দিলেন হার্লে স্ট্রীট,লন্ডনে মানসিক হাসপাতালে।
এই সময় ক্রিমেন যুদ্ধ শুরু হল ইংল্যান্ড আর রাশিয়ার মধ্যে মুলতঃ তুর্কীর অধিকার নিয়ে। ব্রিটিশদের প্রাথমিক জয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছিল তাদের সৈন্যের মৃত্যুতে। ব্রিটিশদের মিলিটারি হাসপাতালে আর ক্যাম্পে অসংখ্য সৈন্য প্রাথমিক চিকিতসার অভাবে মারা যেতে লাগল প্রতিদিন। এর সাথে যোগ হয়েছিল কলেরা, ডাইরিয়া মহামারীর মত। সিডনী হারবার্ট, ব্রিটিশ সেক্রেটারী শেষ পর্যন্ত কঠিন সমালোচনার মুখে পড়ে ফ্লোরেন্সকে দায়িত্ব দিলেন এই মহামারী সামলাবার। সে আমলে যুদ্ধক্ষেত্রে মোটেই মেয়েদের থাকা বা কাজ করা সহজ ছিলনা। ১৮৫৪ সালের নভেম্বর মাসে সাথে প্রায় চল্লিশ জন দৃঢ় মানসিকতার নার্স নিয়ে আর প্রচুর পরিমানে ওষুধ নিয়ে ফ্লোরেন্স এলেন সোজা যুদ্ধক্ষেত্রে। যা দেখলেন তিনি ভাবতেও পারেননি। তার নিজের ভাষায়-
"The sanitary conditions of the hospital were inferior to the poorest homes in the worst section of any large city. Often the wounded men were left lying in their fighting clothes."
অসংখ্য আহত প্রাথমিক চিকিতসাটুকু না পেয়ে পড়ে আছে মাটিতে। ফ্লোরেন্স আস্তে আস্তে সেনাবাহিনীর আহত সৈনিকদের কাছে হয়ে উঠলেন প্রবাদ। দিনরাত একটানা কাজ করে যেতেন ফ্লোরেন্স আর সহকর্মীরা হাসপাতালগুলোকে মানবিক চেহারা দেওয়ার জন্য। কয়েকটি বিশেষ জায়গা যেগুলোকে এই আধুনিক যুগে নার্সিং এর প্রাথমিক ধরা হয় এখানে উল্লেখ করা যাক।
প্রথমে পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছনতা – লিস্টারস এন্টিসেপ্টীক আসার আগে যার প্রাথমিক ধারনা ফ্লোরেন্স গড়ে দিয়ে যান। উল্লেখযোগ্য পাস্তুরের গবেষনা কাল তার কাজের অনেক পরে। অর্থাৎ জীবানুর ধারনা তৈরী করে দিয়ে যান তিনি।
প্রথমেই এবিষয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি কি কি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আজ থেকে ১০০ বছর আগে একবার চোখ বোলানো যেতে পারে। এখনকার যেকোন হাসপাতালে একটা পুরো ম্যানেজমেন্ট টিম যা সামলাতে ব্যাস্ত থাকে তিনি ওই যুদ্ধক্ষেত্রে তা একা সম্ভব করেছিলেন।
ক) নিয়মিত মিলিটারি হাসপাতালের মেঝে পরিস্কার
খ) আলাদা রান্নাঘর- পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাবার সরবরাহ
গ) পৃথক লন্ড্রি সৈনিকদের
ঘ) পৃথক ঔষধাগার ও তার রক্ষনাবেক্ষনের প্রশিক্ষন
ফলাফলঃ ফ্লোরেন্স এই গুরুদায়িত্ব পালন করেন অসীম নিষ্ঠার সাথে। রাশিবিদ্যা বলছে তার সময়ে মৃত্যর হার ৯০ শতাংশের নিচে নেমে যায়।
ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের আসল সাফল্য এ সব কিছুর ওপরে। রাত নেমে আসার পর হাতে দীপশিখা নিয়ে একা ঘুরে বেড়াতেন অসুস্থ সেনাদের পাশে। শুনতেন তাদের কথা। সেনাদের কাছে তাই ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল – এঞ্জেল- Lady with the lamp. ঘন্টার পর ঘন্টা কাটাতেন আহত সেনাদের পাশে তাদের প্রিয়জনের অভাব দূর করে দিতেন পরম মমতায়। আজকের রেড ক্রশ তার এই সেবাপরায়নায়তায় অনুপ্রানিত সন্দেহ নেই।১৮৫৬ সালে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। আর্মি হাসপাতালের যে দূরবস্থা তিনি নিজে দেখেছিলেন সেগুলি নিয়ে গড়ে তোলেন জনমত। এই কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তদানীন্তন ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়াকে। তার অক্লান্ত সাধনায় তৈরী হল “ আর্মি মেডিকেল কলেজ”।
তার প্রকাশিত বইঃ
ক) নোটস অন হসপিটাল
খ) নোটস অন নার্সিং
প্রতিষ্ঠা করে যান “ নাইটএঙ্গেল স্কুল অফ নার্সেস” সেন্ট থামাস হসপিটালে।
শেষ দিকে ফ্লোরেন্স নাইটএঙ্গেল অসুস্থ হয়ে পড়েন ও ১৮৯৫ সালে দৃষ্টিশক্তি হারান। তারপরও তিনি পনের বছর বেঁচে ছিলেন। ১৯১০ সালে তার মৃত্যু হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে তার অবদান স্মরন করে পালিত হয় ”সেবিকা দিবস”।
অগত্যা মানতে হল মা-বাবাকে। তিনি নার্সিং পড়াশোনা করলেন টানা দুবছর কেইসেরেথ, জার্মানীতে । অত্যন্ত কঠিন সে ট্রেনিং শেষে মা ফ্যানি নাইটএঙ্গেলকে লিখলেন- এটুকুই চান জীবনে ("This is Life! I wish for no other world but this.")। পৃথিবীর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতিহাস সেদিনই পেল নার্সিং-এর অনন্য নজির।
এর মধ্যে লণ্ডনের বিভিন্ন হাসপাতালে এলিজাবেথ ব্ল্যাকওয়েলের সাথে কাজ করেছেন মেডিসিনের ওপর । অনুপ্রানিত হয়েছেন এলিজাবেথের ব্যাক্তিত্ব আর বুদ্ধিমত্তায়। তো এই এলিজাবেথ কে? এলিজাবেথ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মহিলা চিকিতসক। মূলতঃ তার অনুপ্রেরনায় ফ্লোরেন্স যোগ দিয়েছিলেন নার্সিং ট্রেনিংয়ে। শিক্ষা শেষে ফ্লোরেন্স যোগ দিলেন হার্লে স্ট্রীট,লন্ডনে মানসিক হাসপাতালে।
এই সময় ক্রিমেন যুদ্ধ শুরু হল ইংল্যান্ড আর রাশিয়ার মধ্যে মুলতঃ তুর্কীর অধিকার নিয়ে। ব্রিটিশদের প্রাথমিক জয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছিল তাদের সৈন্যের মৃত্যুতে। ব্রিটিশদের মিলিটারি হাসপাতালে আর ক্যাম্পে অসংখ্য সৈন্য প্রাথমিক চিকিতসার অভাবে মারা যেতে লাগল প্রতিদিন। এর সাথে যোগ হয়েছিল কলেরা, ডাইরিয়া মহামারীর মত। সিডনী হারবার্ট, ব্রিটিশ সেক্রেটারী শেষ পর্যন্ত কঠিন সমালোচনার মুখে পড়ে ফ্লোরেন্সকে দায়িত্ব দিলেন এই মহামারী সামলাবার। সে আমলে যুদ্ধক্ষেত্রে মোটেই মেয়েদের থাকা বা কাজ করা সহজ ছিলনা। ১৮৫৪ সালের নভেম্বর মাসে সাথে প্রায় চল্লিশ জন দৃঢ় মানসিকতার নার্স নিয়ে আর প্রচুর পরিমানে ওষুধ নিয়ে ফ্লোরেন্স এলেন সোজা যুদ্ধক্ষেত্রে। যা দেখলেন তিনি ভাবতেও পারেননি। তার নিজের ভাষায়-
"The sanitary conditions of the hospital were inferior to the poorest homes in the worst section of any large city. Often the wounded men were left lying in their fighting clothes."
অসংখ্য আহত প্রাথমিক চিকিতসাটুকু না পেয়ে পড়ে আছে মাটিতে। ফ্লোরেন্স আস্তে আস্তে সেনাবাহিনীর আহত সৈনিকদের কাছে হয়ে উঠলেন প্রবাদ। দিনরাত একটানা কাজ করে যেতেন ফ্লোরেন্স আর সহকর্মীরা হাসপাতালগুলোকে মানবিক চেহারা দেওয়ার জন্য। কয়েকটি বিশেষ জায়গা যেগুলোকে এই আধুনিক যুগে নার্সিং এর প্রাথমিক ধরা হয় এখানে উল্লেখ করা যাক।
প্রথমে পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছনতা – লিস্টারস এন্টিসেপ্টীক আসার আগে যার প্রাথমিক ধারনা ফ্লোরেন্স গড়ে দিয়ে যান। উল্লেখযোগ্য পাস্তুরের গবেষনা কাল তার কাজের অনেক পরে। অর্থাৎ জীবানুর ধারনা তৈরী করে দিয়ে যান তিনি।
প্রথমেই এবিষয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি কি কি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আজ থেকে ১০০ বছর আগে একবার চোখ বোলানো যেতে পারে। এখনকার যেকোন হাসপাতালে একটা পুরো ম্যানেজমেন্ট টিম যা সামলাতে ব্যাস্ত থাকে তিনি ওই যুদ্ধক্ষেত্রে তা একা সম্ভব করেছিলেন।
ক) নিয়মিত মিলিটারি হাসপাতালের মেঝে পরিস্কার
খ) আলাদা রান্নাঘর- পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাবার সরবরাহ
গ) পৃথক লন্ড্রি সৈনিকদের
ঘ) পৃথক ঔষধাগার ও তার রক্ষনাবেক্ষনের প্রশিক্ষন
ফলাফলঃ ফ্লোরেন্স এই গুরুদায়িত্ব পালন করেন অসীম নিষ্ঠার সাথে। রাশিবিদ্যা বলছে তার সময়ে মৃত্যর হার ৯০ শতাংশের নিচে নেমে যায়।
ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের আসল সাফল্য এ সব কিছুর ওপরে। রাত নেমে আসার পর হাতে দীপশিখা নিয়ে একা ঘুরে বেড়াতেন অসুস্থ সেনাদের পাশে। শুনতেন তাদের কথা। সেনাদের কাছে তাই ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেল – এঞ্জেল- Lady with the lamp. ঘন্টার পর ঘন্টা কাটাতেন আহত সেনাদের পাশে তাদের প্রিয়জনের অভাব দূর করে দিতেন পরম মমতায়। আজকের রেড ক্রশ তার এই সেবাপরায়নায়তায় অনুপ্রানিত সন্দেহ নেই।১৮৫৬ সালে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। আর্মি হাসপাতালের যে দূরবস্থা তিনি নিজে দেখেছিলেন সেগুলি নিয়ে গড়ে তোলেন জনমত। এই কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তদানীন্তন ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়াকে। তার অক্লান্ত সাধনায় তৈরী হল “ আর্মি মেডিকেল কলেজ”।
তার প্রকাশিত বইঃ
ক) নোটস অন হসপিটাল
খ) নোটস অন নার্সিং
প্রতিষ্ঠা করে যান “ নাইটএঙ্গেল স্কুল অফ নার্সেস” সেন্ট থামাস হসপিটালে।
শেষ দিকে ফ্লোরেন্স নাইটএঙ্গেল অসুস্থ হয়ে পড়েন ও ১৮৯৫ সালে দৃষ্টিশক্তি হারান। তারপরও তিনি পনের বছর বেঁচে ছিলেন। ১৯১০ সালে তার মৃত্যু হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে তার অবদান স্মরন করে পালিত হয় ”সেবিকা দিবস”।
 
No comments:
Post a Comment